এ বার ‘সর্বজয়া’ রূপে দেবশ্রী রায়। বাংলা ছবি বা বাংলা ধারাবাহিকে তাঁকে দেখার জন্য আগ্রহ জমছিল দর্শকের মধ্যে। শেষ পর্যন্ত টেলিভিশনের দিকে ঝুঁকলেন দেবশ্রী। সেটা কি বাংলা ছবির পড়তি অবস্থা দেখে? দেবশ্রীর সাফ কথা, ‘বাংলা ছবির কোনও বাজার নেই। একটা ছবি করলেও হয়তো শখে করতে পারি। তা-ও মনের মতো চরিত্র পেলে করবো। কিন্তু ধারাবাহিক বাছতে হল, যাতে অভিনয়টা বজায় রাখতে পারি। আগে মানুষের ঘরে-ঘরে পৌঁছে যাওয়া দরকার। আমার দর্শক যেমন আমাকে মিস করছিলেন, তাঁরা জানাচ্ছিলেন আমাকে সে কথা, তেমনই আমিও দর্শককে মিস করছিলাম’। তবে এখনই এপিসোডের শুটিং শুরু করছেন না অভিনেত্রী। করোনার দাপট কমলে তারপর শুটিং শুরু করতে চান।
রাজনীতিতে থাকলে কি ধারাবাহিকের জন্য সময় বের করা সমস্যার হতো? অভিনেত্রীর উত্তর, ‘ধারাবাহিকের জন্য অনেকটা সময় দিতে হয়। আমি যা করি একশো শতাংশ দিয়ে করি। দেবশ্রী রায়ের মধ্যে কোনও তঞ্চকতা নেই। তাই রাজনীতি আর ধারাবাহিকের শুটিং একসঙ্গে সামলানো মুশকিল হতো। এখন শুধু আমার প্রতিষ্ঠানের কাজ আর শুটিং। আশা করছি সামলাতে পারবো’। প্রসঙ্গত শহরে লকডাউন চললে অফিসপাড়ায় কুকুররা খেতে পায় না। তাই শহরজুড়েই বিভিন্ন অফিসপাড়ায় তাদের খাওয়ার ব্যবস্থা করছেন দেবশ্রী।
বাংলা ধারাবাহিক ‘শ্রীময়ী’-তে এমনই এক গৃহবধূর চরিত্রে অত্যন্ত জনপ্রিয় ইন্দ্রাণী হালদার। অনেকের মতে, এটা দেবশ্রী-ইন্দ্রাণী লড়াই। দেবশ্রী কী মনে করেন? ‘ইন্দ্রাণীর সঙ্গে আমার কোনও লড়াই নেই। এটা আমার নিজের লড়াই। নিজের যুদ্ধ। প্যাশন। অনুভূতি। দর্শকের কাছে নিজেকে আবার গ্রহণযোগ্য করার লড়াই, যে দর্শক আমাকে চিরকাল এত ভালোবেসেছেন’, হাসেন দেবশ্রী। এ কথাও স্পষ্ট করলেন, যে সময় একের পর এক সিনেমায় কাজ করছিলেন, তখন টেলিভিশনে কাজ করতে পিছপা হননি। যেমন ‘মহাভারত’, ‘নগরপাড়ের রূপনগর’, ‘বিরাজ বউ’ বা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘দেনা পাওনা’।
কিছু মাস আগে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ কিছু অপমানজনক কথা বলেছিলেন দেবশ্রী সম্পর্কে। নায়িকার কোনও কাজ নেই, সে কথাও তুলেছিলেন বৈশাখী। এখন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেপ্তার পর্ব দেখে তাঁর কী মনে হচ্ছে? ‘পাগলে কী না বলে’ ভেবে কথাগুলো উড়িয়ে দিয়েছিলাম। আমার সঙ্গে কিছু ঘটলে, আমি ঈশ্বরকে জানাই। মানুষকে জানাই না। বলি, তুমি এর বিচার করো। মানুষ তো নিমিত্তমাত্র। মানুষ ভুল করবে আর তারপর ভগবানের পুজো করে পার পেয়ে যাবে, সেটা হয় না। কর্মফল পেতেই হবে। সে জন্য আমায় কে কী বলেছে, তার বিচার ভগবান করছেন। যা কিছু ঘটছে বা ঘটবে, সেটা কর্মফল’, উত্তর দেবশ্রীর।