বাংলার কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা মৃণাল সেনের জন্মবার্ষিকীতে ফিরে দেখা যাচ্ছে তাঁর সৃষ্টির অসামান্য প্রভাব। সত্যজিৎ রায় ও ঋত্বিক ঘটকের পাশাপাশি বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব তিনি, যাঁর হাত ধরে বহু শিল্পীর অভিনয়ে হাতেখড়ি হয়েছে। তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন মিঠুন চক্রবর্তী ও মমতা শঙ্কর, যাঁরা দু’জনেই ‘মৃগয়া’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন।
মমতা শঙ্কর তাঁর অভিনয়জীবনের সূচনা প্রসঙ্গে স্মৃতিচারণা করেছেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ‘মৃগয়া’ না হলে হয়তো তিনি কখনও অভিনেত্রী হিসাবে পরিচিত হতেন না। মৃণাল সেন তাঁর মাকে (অমলাশঙ্কর) বলেছিলেন, কেন তাঁর মেয়ে অভিনয়ে আসছেন না। তখন তিনি মাত্র ১৯ বছর বয়সী ছিলেন এবং প্রথমবার অভিনয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে মৃণালদাকে খবর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
‘মৃগয়া’ ছবিতে ‘ডুঙ্গরি’ চরিত্রে অভিনয় করার পর, মমতা শঙ্কর ‘খারিজ’ ছবিতে কাজ করেন, যা ২০২৩ সালে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘পালান’ ছবির মাধ্যমে পুনরায় আলোচনায় আসে। শ্যুটিংয়ের সময় এক দৃশ্যে তিনি বাস্তবিকভাবে কেঁদে ফেলেছিলেন, যা দেখে মৃণাল সেন তাঁকে এসে জড়িয়ে ধরেন এবং প্রশংসা করেন।
এই ঘটনাগুলি বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে মৃণাল সেনের অপরিসীম অবদানকে স্মরণ করায়। তাঁর চলচ্চিত্র শুধু শিল্পীদের আত্মপ্রকাশের ক্ষেত্র তৈরি করেনি, বরং তাঁদের শিল্পের প্রতি নিবেদনকে আরও গভীরভাবে গড়ে তুলেছিল।
এই কিংবদন্তি পরিচালকের জন্মবার্ষিকীতে, তাঁর অবদান ও শিল্পসৃষ্টি নতুন প্রজন্মের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে থাকছে। তাঁর নির্মিত চলচ্চিত্রগুলির ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও আবেগঘন স্মৃতি আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।