ক্যান্সারের যত্নে একটি নতুন অধ্যায়; টাটা ট্রাস্ট কলকাতায় নিয়ে এসেছে ‘গাঁঠ পে ধ্যান’

স্তন ক্যান্সারের সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যকে আরও এগিয়ে নিয়ে, টাটা ট্রাস্ট আজ বিখ্যাত টাটা মেডিকেল সেন্টারে আয়োজিত একটি অনন্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কলকাতায় তার গাঁঠ পে ধ্যান অভিযানের দ্বিতীয় ধাপ চালু করেছে। বৃহত্তর ‘ক্যায়সে কা ক্যান্সার’ ক্যাম্পেনের একটি অংশ ‘গাঁঠ পে ধ্যান’-এর লক্ষ্য হল সচেতনতা তৈরি করা, খোলামেলা কথপোকথনে উৎসাহিত করা এবং ‘লাম্পস ইন ফুড’-এর অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ চেতনার মাধ্যমে সর্বস্তরে মহিলাদের মধ্যে স্তন স্ব-পরীক্ষার গুরুত্ব তৈরি করে স্তন ক্যান্সারের প্রতি ব্যাপক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। স্তন ক্যান্সার ভারতে অসমানুপাতিকভাবে মহিলাদের প্রভাবিত করে, দেশে 50 শতাংশেরও বেশি স্তন ক্যান্সার শেষ পর্যায়ে নির্ণয় করা হয়। রোগ নির্ণয় এবং সচেতনতার অভাবের ফলে চিকিৎসায় বিলম্ব হয় এবং এটি প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত না হলে মারাত্মক হতে পারে। টাটা ট্রাস্ট একটি সহজ কিন্তু উদ্ভাবনী রূপক ব্যবহারের মাধ্যমে প্রাথমিক শনাক্তকরণের গুরুত্ব সম্পর্কে মহিলাদের শিক্ষিত করতে তাদের সঙ্গে জড়িত হয়ে সমস্যাটির মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য নিবেদিত।

পরিবারের জন্য রান্না করা বেশিরভাগ মহিলাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ, বিশেষ করে গ্রামীণ ভারতে। বিশেষত তাদের রান্নায় ভুলত্রুটি রোধে জন্য, মহিলারা রান্নার ক্ষেত্রে যে যত্ন নেন, ‘গাঁঠ পে ধ্যান’ ক্যাম্পেন, সমান্তরালভাবে তাদের স্বাস্থ্য ও নিয়মিত ভাবে ‘গাঁঠ’ (ত্রুটি)-এ লক্ষণগুলো যাচাই করার জন্য, যার ক্যান্সারের সঙ্গে সম্পর্ক থাকতে পারে, স্তন স্ব-পরীক্ষার ক্ষেত্রে একই অধ্যবসায় প্রয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছে। রাঁচিতে স্তন ক্যান্সার সচেতনতা মাস(অক্টোবর) চলাকালীন ‘গাঁঠ পে ধ্যান’-এর সফল প্রবর্তনের পর, কলকাতায় এই অনুষ্ঠান সেলিব্রিটি শেফ অনন্যা ব্যানার্জির উপস্থিতিতে হয়েছিল। দুটি জনপ্রিয় রান্নার বইয়ের লেখিকা, পুরস্কার বিজয়ী শেফ ব্যানার্জি গোটা দেশের 5-তারা হোটেলে তাঁর বিশাল অভিজ্ঞতার জন্য পরিচিত। অনুষ্ঠানে একটি ইন্টারেক্টিভ রন্ধনসম্পর্কিত প্রদর্শনীর মাধ্যমে স্থানীয় নারীদের সমন্বয়ে শ্রোতাদের বিমোহিত করে, শেফ ব্যানার্জি, স্থানীয় উপাদেয় রসোপুলি পিঠা তৈরি করেছিলেন কিন্তু একটি মোচড় দিয়ে- খেজুর এবং কিশমিশ দিয়ে ভরা, যা ঐতিহ্যগত রেসিপির পাশাপাশি দশর্কদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে সাহায্য করেছিল।

এই মিষ্টি খাবারের রেসিপি প্রদর্শন করে, তিনি আলোচনা করেন যে কীভাবে খাবার তৈরির সময় ত্রুটি একটি খাবারের স্বাদ এবং গঠন নষ্ট করতে পারে এবং এই বিষয়ে আলোকপাত করেছিলেন যে, এই ত্রুটি সব ক্ষেত্রেই অবাঞ্ছিত। এই রুপকটি ‘গাঁঠ পে ধ্যান’ উদ্যোগের কেন্দ্রীয় স্তম্ভ গঠন করে, মহিলাদের স্তন স্ব-পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের দেহকে একই যত্ন এবং মনোযোগ দিতে উৎসাহিত করে, যা তারা রান্নার সময় করেন। ঘটনা এবং সহজ বার্তা দ্বারা উৎসাহিত হয়ে, 150 এর অধিক মহিলা নিজেদের জন্য স্তন ক্যান্সার স্ক্রীনিং নিবন্ধন করতে একটি উদ্যোগ নিয়েছেন টাটা মেডিক্যাল সেন্টারে। কলকাতায় অনুষ্ঠিত এই ঘটনা হলো ‘গাঁথ পে ধ্যান’ প্রচারের দ্বিতীয় পর্ব, যা ঝারখণ্ডে উদ্বোধন করা হয়েছিল এবং এখন এটি অন্যান্য রাজ্যগুলি, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং অসম সহ, অবশেষে একটি জাতীয় আওতা ঘষে নেবে।

অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে ড. পি অরুণ, টাটা মেডিকেল সেন্টার, কলকাতার ডিরেক্টর বলেন, “বেশিরভাগ স্তন ক্যান্সার শুধুমাত্র পরবর্তী পর্যায়ে শনাক্ত করা হয়, মহিলাদের নিজের স্বাস্থ্যের দায়িত্ব নেওয়া প্রয়োজন। অসচেতনতার প্রভাব মারাত্মক হতে পারে, নিয়মিত এবং পুঙ্খানুপুঙ্খ স্ব-পরীক্ষা পরিচালনা করার পরে ক্লিনিকাল স্তন পরীক্ষা করা রোগের প্রাথমিক শনাক্তকরণ এবং পরবর্তী চিকিৎসায় সহায়তা করতে পারে। আমরা গাঁঠ পে ধ্যান উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে গর্বিত, যেটি দেশের প্রধান অঞ্চল জুড়ে স্থানীয় সম্প্রদায়ের মহিলাদের মধ্যে সময়মত স্ক্রিনিঙের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার বিষয়ে সফলভাবে সচেতনতা বৃদ্ধি করেছে। আমরা আশা করি এই উদ্যোগটি সমগ্র দেশে মহিলাদের উন্নত স্বাস্থ্য ফলাফলের ভবিষ্যৎ গঠন করবে।“ গাঁঠ পে ধ্যান হল এই ট্রাস্টের জাতীয় সচেতনতা অভিযান ‘ক্যায়সে কা ক্যানসার’-এর একটি অংশ। যার সূচনা হয়েছিল 2023-এর ফেব্রুয়ারিতে, যা সমস্ত সোশ্যাল ও ডিজিটাল মিডিয়া জুড়ে 2 কোটির বেশি ভিউ পেয়েছে। এই ট্রাস্ট সমাজের যে অংশের মানুষের সেবায় নিয়োজিত তাদের জীবনের সংস্পর্শে ট্রাস্ট তাদের সেই সব কর্মসূচির মাধ্যমে আসতে পারবে যেগুলি স্থানীয় ভাবে প্রাসঙ্গিক ও গভীর অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন। এই অ্যাক্টিভেশনের জন্য এই আওতার প্রসার হচ্ছে সঞ্জীবনী, ইউনাইটেড অ্যাগেইনস্ট ক্যান্সার, একটি ফেডারাল ব্যাঙ্ক হরমিস মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন, নিউস 18 নেটওয়ার্ক, এবং টাটা ট্রাস্টস এর মাধ্যমে, যা ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতা উন্নত করতে এবং ক্যান্সার উপর আলোচনা উৎসাহিত করতে লক্ষ্য করে। এই যৌথ প্রয়াসের লক্ষ্য হল সত্বর ও অবিরত ভাবে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা এবং উপসর্গ চিহ্নিতকরণ সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তোলা। এই দুই-ই হল ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের গুরুত্বপূর্ণ দিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *