এবার অপশক্তির কবলে দুই কিশোরী! কেমন হল এক্সরসিস্টের সিকুয়েল?

মুক্তি পেয়েছে ‘দ্য এক্সরসিস্ট: বিলিভার’। ১৯৭৩ সালে গোটা পৃথিবী ভয়ে শিউরে উঠেছিল ‘দ্য এক্সরসিস্ট’ দেখে। সেই ছবিরই সরাসরি সিকুয়েল এই ছবি। কিন্তু ফ্র্যাঞ্চাইজির সুনাম কি বজায় রাখতে পারল নতুন ছবিটি? গত শতাব্দীর ছয়ের দশকে আচমকাই যেন বেড়ে গিয়েছিল শয়তানের উপাসকদের রমরমা। ১৯৬৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘রোজমেরি’স বেবি’ থেকে একটা ট্রেন্ড শুরু হয়েছিল। যা চরমে পৌঁছয় ১৯৭৩ সালে। সর্বকালের অন্যতম সেরা ভয়ের ছবি ‘দ্য এক্সরসিস্ট’ মুক্তি পায় সেই বছরই। প্রেতাবিষ্ট রেগানকে হরর সিনেমাপ্রেমীরা আজও ভোলেনি। এবছরের ডিসেম্বরে ছবিটির পঞ্চাশ বছর পূর্তি। তার ঠিক আগেই মুক্তি পেল ‘দ্য এক্সরসিস্ট: বিলিভার’। এই ছবিতে একটি নয়, দুটি কিশোরীর মধ্যে একই সঙ্গে অপশক্তির ভর হয়। আর তারপর শুরু হয় নানা অদ্ভুতুড়ে ঘটনা। ক্রমেই অ্যাঞ্জেলা ও ক্যাথরিন নাম্নী দুটি মেয়ে যেন সম্পূর্ণ অন্য দুই অস্তিত্বে পরিণত হতে থাকে।

ছবির ট্রেলার থেকেই আমাদের জানা, দিন তিনেকের জন্য নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল তারা। জানা যায়, শেষবার জঙ্গলের দিকে হেঁটে গিয়েছিল দুজনে। এরপর ফিরেও আসে। কোথায় গিয়েছিল তারা? তা সরাসরি বলা না হলেও উঠে আসে বাইবেলে বর্ণিত জিশুর তিন দিনের জন্য নরক গমনের আখ্যান। যা থেকে ইঙ্গিত মেলে নরক না হোক অন্তত নরকের দ্বারপ্রান্ত পর্যন্ত তারা নিশ্চয়ই পৌঁছে গিয়েছিল। খ্রিস্টীয় বিশ্বাস অনুসারে,শয়তান সব সময়ই চেষ্টা করে চলেছে ঈশ্বরের হাত থেকে মানুষকে ছিনিয়ে নিতে। এই কিশোরীরাও সেই ষড়যন্ত্রেরই শিকার হয়ে পড়ে। তাদের শরীরে বাসা বাঁধে অপশক্তি। এরপর নানা ভয়ঙ্কর কাণ্ডকারখানার পর শুরু হয় এক্সরসিজম।

এই নিয়েই ছবি। আর এখানেই গোলমাল। এক্সরসিস্ট ফ্র্যাঞ্চাইজির এটা ষষ্ঠ ছবি। তা সত্ত্বেও প্রথম ছবির সঙ্গে তুলনাতেও আসে না ছবিটি। ক্যামেরার কাজ বেশ ভাল। কয়েক জায়গায় ‘জাম্প স্কেয়ারে’ অন্ধকার হলে দর্শকরা শিউরে উঠবেনই। কিন্তু গল্প সেভাবে জমল না। এমনকী ভয় পাওয়ার মুহূর্তও তুলনামূলক ভাবে বেশ কম। তবু ধীর গতির প্রথমার্ধে সামান্য হলেও শিরশিরানি অনুভব করা যায়। দ্বিতীয়ার্ধে সেটুকুও যেন উধাও। অভিনয়ে সকলেই যথাসাধ্য করেছেন। দুই কিশোরীও তাদের প্রেতাবিষ্ট হওয়ার মুহূর্তগুলো ভালোই ফুটিয়েছে। কিন্তু বিরাট কিছু করার সুযোগ চিত্রনাট্যই দেয় না। ছবির পরিচালক ডেভিড গর্ডন গ্রিন হ্যালোউইন সিরিজের তিনটি ছবি পরিচালনা করেছিলেন।  ছবিতে দেখা মেলে ক্রিস ম্যাকনেলের। সেই প্রেতাবিষ্ট কিশোরী রেগানের মা। তিনি সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন অ্যাঞ্জেলা ও ক্যাথরিনকে।  কিন্তু যে কোনও ভৌতিক ছবির আসল মূলধন হল একটা অস্বস্তি। সেই অস্বস্তি এই ছবিতে তৈরি করা যায়নি। যে ব্যর্থতার দায় দুই চিত্রনাট্যকার গর্ডন ও পিটার স্যাটলারকেই নিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *