বছর ঘুরল তার মৃত্যু ঘটনা। গতবছর এমন সময় তার অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল গোটা বিশ্ব। সাধারণ মানুষ থেকে বলিউড একাধিক অভিযোগে তোলপাড় হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়া। সারা বিশ্বে উঠেছিলো ন্যায় বিচারের রব। তিনি আর কেউ নন বলিউডের জনপ্রিয় ও পরিচিত মুখ অভিনেতা সুশান্ত সিংহ রাজপুত। দেখতে দেখতে কেটে গেল একটা বছর। অভিশপ্ত সেই দিনটা আবারও ফিরে এল। একবছর আগে এই ১৪ জুনই সারা দেশকে চমকে দিয়েছিল একটি ব্রেকিং নিউজ। আত্মহত্যা করেছেন অভিনেতা সুশান্ত সিংহ রাজপুত।
ঘড়ির কাঁটায় তখন বেলা সাড়ে ১০টা হবে। সুশান্ত সিং রাজপুতের ফ্ল্যাটের নীচে শয়ে শয়ে লোকের ভিড়। প্রিয় অভিনেতাকে দেখার জন্য ভক্তরা আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন। না কোনও আনন্দ উৎসব নয়। বরং, এ প্রচেষ্টা প্রয়াত সুশান্ত সিং রাজপুতকে শেষবার দেখার। অভিযোগ-পালটা অভিযোগের পালা, সিবিআই, ইডি, এনসিবি—সবকিছু মিলিয়ে মাসের পর মাস টানটান উত্তেজনা চলেছে। সামনে এসেছে একের পর এক বিতর্ক। কিন্তু কোনো বিচার মেলেনি। বলিউডের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন সুশান্ত সিং রাজপুত।
ভালো অভিনেতাকে হারানোর পাশাপাশি একজন উঠতি তারকাকেও হারিয়েছে বলিউড। আজও তামাম দর্শকের কাছে তিনি রয়ে গিয়েছেন প্রিয় অভিনেতা হিসাবে। ২০০৯ সালে ছোট পর্দার ধারাবাহিক ‘পবিত্র রিস্তা’য় মুখ্য চরিত্রে অভিনয় দিয়ে শুরু তার অভিনয় জগতে পথচলা। এমন প্রতিভাকে কি কেবল ছোটপর্দায় আটকে রাখা যায় ২০১১ সালে মুকেশ ছাবরার পরিচালনায় ‘কাই পো চে’ ছবি দিয়ে বলিউড অভিষেক হয় সুশান্তের। স্বল্প দিনের চলচ্চিত্র জীবনে তিনি বলিউডকে উপহার দিয়েছেন ‘পিকে’, ‘এম.এস ধোনি, ‘কেদারনাথ’, ‘ছিছরে’র মতো অসাধারণ ছবি গুলি। তার শেষ ছবি ‘দিল বেচারা’ মুক্তি পাওয়ার আগেই প্রয়াত হয়েছেন অভিনেতা।
অভিনয়ের পাশাপাশি বিজ্ঞান, মহাকাশ, তারামণ্ডল নিয়ে ছিল তার অগাধ চর্চা। তার এই বিশেষ গুণই তাকে আলাদা করে তোলে বলিউডের তথাকথিত আর পাঁচ জন অভিনেতাদের থেকে। দিল্লি টেকনোলজি ইউনিভার্সিটি থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেছেন তিনি। ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করলেও তার আগ্রহ ছিল আস্ট্রফিজিক্সে। তিনি পেয়েছিলেন ‘ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ফিজিক্স অলিম্পেড’এর খেতাব। তিনি হতে চেয়েছিলেন একজন মহাকাশচারী। মহাকাশ, তারামণ্ডল নিয়ে ছিল তার অসীম আগ্রহ। সেই আগ্রহ থেকেই তিনি নিজের বাড়ির বারান্দায় বসিয়েছিলেন আস্ত একটি টেলিস্কোপ। বলিউডের কজন অভিনেতা আছেন যারা সুশান্তের মতো মহকাশপ্রেমী। বই পড়তে সাংঘাতিক ভালোবাসতেন। কিছুটা বইপোকা বলা চলে। শ্যুটিং ফ্লোরেও বই সব সময় সঙ্গে রাখতেন। ইন্ডাস্ট্রি থেকে শুরু করে দর্শকমহল সকলেই থমকে গিয়েছিল এমন একজন উঠতি তারকার মৃত্যু সংবাদে।